The Golden Ratio – ডিজাইনের সকল রহস্যের উৎস

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫

১৫৯৭ সালে Michael Maestlin আবিষ্কার করেন “ফাই” বা “G” বা “গোল্ডেন রেশিও”। Golden Ratio টা আসলে কী?  Golden Ratio বা  সোনালী অনুপাতকে প্রকাশ করা হয় ল্যাটিন অক্ষর Φ (PHI/ ফাই) দ্বারা। PHI  “ফাই”বা “G” এর অংক মান = ১ .৬১৮। এটা আসলে আর কিছুই নয়, একটা গাণিতিক অনুপাত মাত্র যার মান 1.618033988…… । আবার PHI এর সাথে কিন্তু ফিবনোচ্চি সিরিজেরও গভীর সম্পর্ক রয়েছে । ফিবনোচ্চি সিরিজটা কি ? এটা হল এমন একটা সিরিজ যার প্রতিটা পদ আগের দুই পদের যোগফল :1,1,2,3,5,8,13,21,34,55,89,144…………PHI এর মান আমরা ফিবনোচ্চি সিরিজ থেকেও পেতে পারি । ফিবনোচ্চি সিরিজের যেকোন পদকে আগের পদ দিয়ে ভাগ করলে সেই সংখ্যাটাই PHI । প্রথম কয়েকটা পদের জন্য হিসেব কিছুটা বিদঘুটে মনে হলেও ফিবনোচ্চি সিরিজ ধরে যত সামনে যাওয়া হোবে তত ক্রমিক সংখ্যাদ্বয়ের অনুপাত PHI এর দিকে এগবে এবং ৩৯ তম পদ থেকে ক্রমিক সংখ্যাদ্বয়ের অনুপাত প্রায় ধ্রুব হয়ে যাবে। আর সেই ধ্রুব সংখ্যাই PHI । ১৫০৯ সালে Luca Pacioli’s  এর বই  De divina proportione এ প্রথম গোল্ডেন রেশিও এর ব্যাপারে প্রকাশিত হয়। এরপর Mathematician Euclid তার Elements (Greek: Στοιχεῖα)  গ্রন্থে প্রথম PHI এর জ্যামেতিক ব্যখ্যা দেন।

সারা বিশ্বে আমরা যত বড় বড় দালান কোঠা দেখি তার সবগুলোতে গোল্ডেন রেশিও-র প্রভাব বিদ্যমান। বিশ্বভ্রম্মান্ডের স্রষ্টা তার প্রতিটি সৃষ্টিতে এই মান ব্যবহার করেছেন । পৃথিবীখ্যাত গণিতবিদ এই মান নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন  পিথাগোরাস, ইউক্লিড, কেপলার, অক্সফোর্ডের পদার্থবিদ রোজার পেনরস এবং প্রাচিন গ্রিসের অনেক বিজ্ঞানী। মানুষের হৃদপিণ্ড, দৈহিক গঠন, ফুল, মাছ, গাছপালা, গ্রহ-নক্ষত্র ইত্যাদি সবকিছুই একই মান(১.৬১৮) দ্বারা গঠিত হয়েছে। মিসরের পিরামিড , আগ্রার তাজমহলে , ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ার , নটরডেম, পারথেনন , ইউনাইটেড নেশন বিল্ডিং সহ আরও অজস্র স্থাপত্যগুলোর আরকিটেকচারাল ডিজাইন গুলো এত সুন্দর কেন?  কারন এসবগুলোতে PHI ব্যবহৃত হয়েছে। আর PHI থাকার কারণেই এগুলো এত বেশি দৃষ্টিনন্দন।

বিখ্যাত চিত্রশিল্প লিয়ো নার্দো দা ভিঞ্চির এই স্বর্ণানুপাত তার চিত্রকর্মগুলোতে ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেই এত আলোচিত হয়েছে। সঙ্গীত শিল্পে জেমস টেনি এই স্বর্ণানুপাতকে উপলব্ধি করেছেন সুরের প্রতিটি তরঙ্গে। সঙ্গীতের নোটের ক্ষেত্রেওও PHI বিদ্যমান। ভায়োলিনসহ আরো অনেক বাদ্যযন্ত্র বানানো হয়েছে এই PHI দিয়ে।

বিখ্যাত কোম্পানির লোগো যেমন Apple, Adidas, Honda, Toyota, Mercedes-Benz, CocaCola, Pepsi, National Geography ইত্যাদি আরো অনেক বড় বড় কোম্পানি  PHI ব্যবহার করেছে।

এছাড়াও সৌরজগতের গ্রহগুলো সূর্যের চারপাশে আবর্তনকালে PHI এর সাথে সম্পর্কিত। পৃথিবীর আবর্তনকালের সাথে গ্রহগুলো PHI এর সুচক আকারে পরিবর্তিত হয়। কো-অরডিনেট পদ্ধতিতে পুর্ব দাগ্রিমাংশ +৩৯.৮২ এবং উত্তর অক্ষাংশ +২১.৪২ । যা দ্বারা প্রমানিত হয় পৃথিবীর গোল্ডেন রেশিও হচ্ছে পবিত্র কাবা । ৯০+৩৯.৮২ = ১১১.৪২ সুতরাং ১১১.৮২ / ১৮০= 0.৬১… এবং ১৮০+৩৯.৮২ = ২১৯.৮২ সুতরাং ২১৯.৮২/৩৬০ = ০.৬১…. তাই  গোল্ডেন রেশিও পয়েন্ট Φ এর মান অনুযায়ী মক্কা এবং ক্বাবাই হচ্ছে পৃথিবীর গোল্ডেন রেশিও পয়েন্ট ।

এরকম আরো অসংখ্য PHI খুঁজে পাওয়া যায় সৌরজগত, মহাবিশ্ব আর পৃথিবীর আনাচে কানাচে। মহাবিশ্বের বিদ্যমান চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যেও PHI (Golden Ratio) শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে। সবকিছুর ভেতরে এক অসাধারণ মেলবন্ধন সৃষ্টি করে রেখেছে। একটু গভীর দৃষ্টি দিলেই PHI খুঁজে পাওয়া যাবে সবকিছুতে। এজন্যই একে বলা হয় The number of life , The divine proportion (স্বর্গীয় অনুপাত)।


Tech Ninja
– Techmorich