ডিজাইনের জগতে কালার বা রঙ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি উপাদান। রঙের ব্যাবহার এবং এর সম্পর্কে প্রচুর পরিমাণ জ্ঞান না থাকলে ডিজাইনের ক্ষেত্রে কালার এর ব্যাবহার ভাল ভাবে করা যায় না।
কালার এর ব্যাবহার এবং গুরুত্ব –
যারা অনলাইনে বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে ডিজাইনের কাজ করেন তারা অধিকাংশ সময়েই কালার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন যে, কিভাবে, কোন কালার ব্যাবহার করলে আপনার ওই ডিজাইন টি আরো বেশী প্রফেশনাল হতো অথবা আরো বেশী দেখতে সুন্দর লাগতো। যদিও নিজের মনের মাধুরি মেশানো রং করাই হচ্ছে ডিজাইনকে সুন্দর করে । কিন্তু তবু যদি কালার সম্পর্কে আপনার ভাল জ্ঞান না থাকে তাহলে কখনোই আপনি আপনার ডিজাইন কে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হবেন । এ কারণে কালার সম্পর্কে আমাদের মোটমুটি ভাল জ্ঞান রাখা অত্যাবশ্যক। বিশেষ করে যারা ডিজাইন করেন।
আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনি আপনার মনের মত সব কিছু ঠিক ঠাক করে সুন্দর ডিজাইন করেছেন কিন্তু যখন আপনার ক্লাইন্ট বা কাস্টমার এর নিকট ডিজাইনটি উপস্থাপন করলেন তখন সে তা পছন্দ করলো না। অথবা অনেক সময় এমনও হয় যে, আপনি এবং আপনার ক্লাইন্ট ডিজাইন পছন্দ করেছেন কিন্তু এই ডিজাইনটিকে কোন ইউজার বা ব্যাবহারকারী পছন্দ করে না। সুতরাং এই ধরনের সমস্যার মোটামুটি ৮০%-৯০% সমাধানের জন্য আপনাকে কালার সম্পন্ধে মোটামুটি ভাল মানের জ্ঞান রাখা অত্যাবশ্যক।
Classification of Color –
কালার কে চেনার জন্য সমস্ত কালার’কে মোটামুটি এই তিনভাগে ভাগে ভাগ করা হয় –
এই কালার গুলোর একটা প্রভাবক আছে। যেটা কালারের উপরে প্রভাব ফেলে হাজার হাজার কালার বা রং তৈরী করে । সেই প্রভাবক হচ্ছে LIGHT বা আলো।
আরেকটা কথা জেনে রাখা দরকার, সেটা হচ্ছে কালো বা সাদা কালার বলতে কোন কালার নাই। (যদিও শুনতে অবাক লাগতে পারে। যারা বিজ্ঞানের ছাত্র তারা ব্যাপারটা ভাল বুঝবেন)
যেখানে আলোর অধিক্য আছে সেখানেই সাদা বা WHITE কালার এর উৎপত্তি। আর যেখানে আলো নেই সেখানেই অন্ধকার বা কালো BLACK COLOR
আমরা জানি যে সূর্যের আলোতে অনেক কালার বিদ্যমান থাকে এবং বিকেলের সূর্যটা একটা লালিমা আভা বা লাল পরিবেশ তৈরী করে। সূর্যটার দিকে তাকালে দেখা যায় যে, সূর্যটার ওই অংশটা ”সাদা বা WHITE” দেখা যাচ্ছে। আর এভাবেই মূলত সাদা কালার এর উৎপত্তি। অর্থাৎ আলোর অধিক্য যেখানে প্রচুর সেখানেই সাদা।
এছাড়াও আপনি আপনার টর্চ লাইট দিয়ে একটা যে কোন স্থান বা কালারের উপরে আলোটা জ্বালান দেখবেন যে, যেই যায়গায় আপনার লাইটের আলো পড়েছে ঠিক সেই জায়গাটুকু সাদা দেখাচ্ছে। যদিও লাইট লাল বা অন্য কোন কালারের উপরে বা ফ্লোরে জ্বালিয়েছেন।
আর যেখানে আলো নেই সেখানেই অন্ধকার বা কালো। এটার প্রমাণ আশা করি বুঝানো দরকার নাই। আমরা রাতের বেলা চোখে দেখি না কেন??? কারণ রাতের বেলা আলো নাই। সূর্য মামা অন্য অারেক দেশ চলে যায়। রাতের বেলা দেখার জন্য আমাদেরকে কৃত্রিম আলো ব্যাবহার করতে হয়।
এই আলোর উপরে ভিত্তি করে কালার বা রং কে আরো তিনটা ভাগে ভাগ করা যায়ঃ-
Primary Color –
এই পৃথিবীটা মহান আল্লাহ তায়ালা মাত্র তিনটা কালার দিয়ে সাজিয়েছেন। কি ভাবতে অবাক লাগছে? অবাক লাগলেও এটাই সত্যি যে, এই পৃথিবী Primary বা Basic কালার হচ্ছে মাত্র তিনটিঃ-
1.Red, 2.Yellow, 3.Blue
হ্যা!! এই তিনটি কালার ই হচ্ছে আমাদের পৃথিবীতে যত কালার আছে তার মধ্যে মৌলিক কালার। এছাড়া আমরা আরো যত ধরণের কালার বা রং দেখতে পাই তা এই তিনটা কালার থেকেই উৎপন্ন। হয়তো অনেকেই চিন্তা করছেন যে, তাহলে তা কিভাবে উৎপন্ন তা এটা কি সম্ভব নাকি!!! আমি এক এক করে সব কিছু নিয়ে আলোচনা করার চেষ্ট করবো। আরো বিস্তারি আলোচনা সামনে করা হবে।
Secondary Color –
Secondary Color হচ্ছে উপরের তিনটা মৌলিক কালারের সংমিশ্রণে আরো তিনটা কালার এর উৎপন্ন হয়। তা হচ্ছে Secondary Color। ভাল করে বুঝার জন্য ইমেজ লক্ষ করুনঃ-
ইমেজে লক্ষ করলেই দেখতে পাবেন যে, তিনটা মৌলিক কালারের মাঝে অর্থাৎ তিনটা মৌলিক কালার সমান সংমিশ্রণে তাদের মাঝে আরো তিনটা কালার উৎপন্ন হয়েছে তা হচ্ছেঃ –
অর্থাৎ মৌলিক কালারের সমান সমান যুক্ত হয়ে যে তিনটি কালার উৎপন্ন করে তা হচ্ছে Secondary Color.
Tertiary Color –
এবার আসা যাক Tertiary Color এ। এ পর্যন্ত আমরা ছয়টা কালার এর পরিচয় পেলাম। এখন আমরা যদি এই ৬ টা কালারের সার্কেল এর দিকে তাকাই এবং এই ছয়টা কালারকে কে আবার অাগের মত সমান সমান ভাবে মিশ্রণ করি তখন আমরা আরো ছয়টা কালার পাই। এই ছয়টা কালার হচ্ছে Tertiary Color। ভালভাবে বুঝতে নিচের ইমেজ লক্ষ করুণঃ-
লক্ষ করুণ যে, ছয়টা কালার এর মাঝে আরো ছয়টা কালার এর উৎপন্ন হয়েছে। আর তা হচ্ছেঃ-
সুতরাং এভাবে Secondary এবং Primary কালার এর মিশ্রণে আরো যে ৬ টি কালারের উৎপন্ন হয়। তা হচ্ছে Tertiary Color ।
চলবে —-
Tahmid Hasan
User Experience Professional